নারী এশিয়া কাপে খেলবে রংপুরের ফারজানা ও মাওয়া

প্রকাশিতঃ ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪, ১৩:০৯

ক্রীড়া ডেস্ক : প্রথমবারের মত আয়োজন করা হচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী এশিয়া কাপ। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) থেকে মালয়েশিয়ায় শুরু হবে এই টুর্নামেন্টটি। এশিয়া কাপে অংশ নিতে বর্তমানে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন নারী ক্রিকেটাররা।

টুর্নামেন্টের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ঘোষিত ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে স্থান করে নিয়েছে রংপুরের ফারজানা ইয়াসমিন মেধা ও জান্নাতুল মাওয়া নামে দুইজন নারী ক্রিকেটার। ফারজানা ইয়াসমীন মেধা ফাস্ট বোলার এবং জান্নাতুল মাওয়া ব্যাটার।

জান্নাতুল মাওয়া ব্যাটসম্যান অলরাউন্ডার। মাওয়া দেশের বাইরে গতবছর অনূর্ধ্ব-১৯ সাউথ আফ্রিকায় খেলেছে। সেই টুর্নামেন্টে দু’টি ম্যাচ খেলে মাওয়া। গত এনসিএলে ভালো পারফরমেন্স ছিল তার। মাওয়া ২০১৮ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হয় এবং কয়েকবছর থাকার পর বাড়ি চলে আসে। তার বাড়ি রংপুর নগরীর সেনপাড়া এরশাদ ব্রিজ সংলগ্ন। মাওয়ার বাবার নাম মোহাম্মদ হোসেন ও মাতা রহিমা বেগম। তারা দুই ভাই দুই বোন। এরমধ্যে সবার ছোট মাওয়া। সে সমাজকল্যাণ বিদ্যাবীথি স্কুল অ্যান্ড কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।

জান্নাতুল মাওয়ার ভাই আরাফাত হোসেন রিয়াদ বলেন, ছোট থেকেই মাওয়ার ক্রিকেটের উপর খুব টান ছিলো। যার কারণে তাকে ক্রিকেট গার্ডেনে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে সে রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগে টুর্নামেন্টে অংশ নেয় এবং তারই ধারাবাহিকতায় গতবছর অনূর্ধ্ব-১৯ সাউথ আফ্রিকায় খেলে সে। মাওয়া ভাল খেলার মাধ্যমে জাতীয় দলে জায়গা করে নিবে এমন প্রত্যাশা আমাদের।

অন্যদিকে ফাস্ট বোলার ফারজানা ইয়াসমিন মেধার বাড়ি রংপুর নগরীর গুড়াতিপাড়া মহিলা মাদ্রাসা সংলগ্ন। তার বাবা দুলাল হোসেন ও মাতা মনোয়ারা বেগম। সে বিকেএসপিতে ঢাকায় দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যায়নরত। সে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছে। অনূর্ধ্ব-১৯ নারী এশিয়া কাপে ভাল খেলার মাধ্যমে আগামীতে জাতীয় দলে ক্রিকেট খেলার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্নপূরণ করতে চায় সে।

ফারজানা ইয়াসমিন মেধা ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। সেই স্বপ্ন থেকেই পাড়ায় সবার সঙ্গে ক্রিকেট খেলতেন এবং নিয়মিত ক্রিকেট খেলা দেখতেন। ক্রিকেটের প্রতি তার এমন অসম্ভব টান দেখে তাকে রংপুর ক্রিকেট গার্ডেন ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি করে দেন তার বাবা। ক্রিকেট গার্ডেনে কোচ মুন্না ও শাকিলের কাছে অনুশীলন করেন মেধা। পরবর্তীতে বিকেএসপিতে ভর্তির জন্য ফরম সংগ্রহ করে মেধা টিকে যায়। ঢাকায় বিকেএসপিতে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয় ফারজানা ইয়াসমিন মেধা। সে বর্তমানে দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত।

ফারজানা ইয়াসমিন মেধা এবারই প্রথম দেশের বাইরে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী এশিয়া কাপ খেলতে গেছেন। এর আগে দেশের মধ্যে রাজশাহী ও সিলেট বিভাগে খেলেছেন এবং রাজশাহী বিভাগে ম্যান অব দ্যা ম্যাচসহ বিভিন্ন পুরস্কার জিতেছেন। ফারজানা ইয়াসমিন মেধার বাবা পেশায় একজন দিনমজুর। বর্তমানে স্ট্রোক করে বিছানায় শয্যাশায়ী। মেধারা এক ভাই এক বোন। মেধা সবার ছোট।

ফারজানা ইয়াসমীন মেধার মা মনোয়ারা বেগম বলেন, খুবই কষ্টের সংসার। তারপরও মেধার ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন পূরণে চেষ্টা করছি। সবসময় উৎসাহ দিয়ে আসছি। তারও প্রবল ইচ্ছা। যার কারণে মেয়ের মতো আমারও স্বপ্ন মেধা যেন জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলতে পারে এবং দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে। আপনারা সবাই দোয়া করবেন।

ক্রিকেট কোচ মুন্না বলেন, ছোট থেকেই মেধা ও মাওয়া তার কাছে কোচিং করেছে। ছোটবেলা থেকেই তাদের খেলার প্রতি যথেষ্ট আগ্রহ লক্ষ করা গেছে। তারা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে তাদের ভবিষৎ খুবই ভালো।

Leave a Reply