ক্রীড়া ডেস্ক : ‘‘বাংলাদেশ এক্সপ্রেস’’। এমন নামে বাংলাদেশের কাউকে আগে ডাকতে শুনেছেন? নাহ শুনেন-নি। কারণ কাউকে আগে এমনভাবে দেখেন-ও নি।
নাহিদ রানাকে চিনে রাখুন। যাকে ডাকা হচ্ছে, ‘‘বাংলাদেশ এক্সপ্রেস’’ নামে। এভাবেই তাকে বিশ্বমঞ্চে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে শারজাহতে সিরিজ চলাকালে নাহিদকে দেখে বিশপ যত্ন নেওয়ার কথা বলেছিলেন। ধারালো পেস বোলারকে শুধু দেশের-ই নয়, বিশ্ব ক্রিকেটের পরবর্তী তারকা বলেছিলেন জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার।
গতকাল কিংসটনে নাহিদ যখন টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম ফাইফারের স্বাদ পেলেন তখন বিশপই ছিলেন ধারাভাষ্যে। ২২ বছরের তরুণের প্রশংসা করতে গিয়ে তাকে ‘‘বাংলাদেশ এক্সপ্রেস’’-ই উপাধি দেন।
গতি নাহিদ রানার মূল শক্তি। ১৫০ কিলোমিটারের আশেপাশে লাগাতার বোলিং করে যান এই পেসার। শুরুর দিকে বোলিংয়ে তেমন কার্যকারিতা ছিল না। তবে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টেস্ট খেলতে নেমে নাহিদ বুঝিয়ে দিয়েছেন তার ভেতরে ভালো করার জেদ আছে। বিশ্বসেরা হওয়ার ক্ষুধা আছে। লাইন ও লেন্থ বজায় রাখার পাশাপাশি স্কিলের দারুণ মিশ্রণে নাহিদ পেয়েছেন প্রথম পাঁচের স্বাদ।
তবে এই সাফল্যের জন্য নিজের মাথা খোলা রেখেছিলেন। বাড়তি কিছু করেননি। খাটাননি জোর। ভালো করতেই হবে সেই চাপও নেননি। নিজের মূল শক্তির জায়গায় স্থির থেকে কিংসটনের ২২ গজ পুরোপুরি ব্যবহার করেছেন। তাতেই মিলেছে সফলতা।
প্রথমবার ৫ উইকেট নেওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নাহিদ বলেছেন, ‘‘প্রথমত ওপরওয়ালার শুকরিয়া আদায় করতে চাই, প্রথমবার পাঁচ উইকেট পেয়েছি। বেশি কিছু চেষ্টা করিনি। শুধু চেষ্টা করেছি, ব্যাটসম্যানকে জায়গা না দিয়ে কীভাবে ‘লাইন টু লাইন’ বোলিং করা যায় এবং কোন পরিস্থিতিতে কোন ব্যাটসম্যানকে কীভাবে বোলিং করা যায়, সেই বোলিংটা করার চেষ্টা করেছি।”
স্কোরবোর্ডে মাত্র ১৬৪ রান নিয়ে লড়াই করা কঠিন। অথচ নাহিদ রানার দুর্দান্ত বোলিং ও তাসকিন-হাসানদের সমর্থনে বাংলাদেশ ১৮ রানের লিড পেয়েছে। নিজের বোলিং নিয়ে নাহিদ রানা বলেছেন, ‘‘এই উইকেটে বেশি কিছু চেষ্টা না করে শুধু ‘লাইন টু লাইন’ বোলিং করে ব্যাটসম্যানকে জায়গা না দিয়ে রান ছাড়া বোলিং করলে ব্যাটসম্যানরা অনেক কিছু করার চেষ্টা করে। আমি মনে করি, বোলারদের অত কিছু চেষ্টা না করে ‘লাইন টু লাইন’ বোলিং করাই ভালো।”
বাংলাদেশ তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে ২১১ রানের লিড নিয়ে। নাহিদের আক্রমণের পর ব্যাটসম্যানরদের প্রতি আক্রমণে এখন পর্যন্ত টেস্টে ভালো অবস্থায় আছে বাংলাদেশ। ডানহাতি পেসারের বিশ্বাস এই টেস্টে ক্যারিবীয়ানদের চাপে রাখতে পারবে বাংলাদেশ, ‘‘অবশ্যই আমরা এখন একটা ভালো জায়গায় আছি। এখান থেকে আমরা যদি আড়াইশর ওপরে যেতে পারি… চতুর্থ দিনে ব্যাটিং করা কঠিন হবে ব্যাটসম্যানদের জন্য। উইকেট একটু অন্যরকমের, অসম বাউন্স থাকবে, স্পিনে টার্ন থাকবে। কাজেই আমরা চতুর্থ দিনে ভালো কিছু একটা বের করব।”
Leave a Reply