সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম কর্নারে অবস্থিত সাতক্ষীরা জেলা এবং বাংলাদেশের আয়তনের সবচেয়ে বড় উপজেলা শ্যামনগর। এই উপজেলা নদী ও সুন্দরবন বিস্তীর্ণ উপজেলা বলা হয়। এই উপজেলায় প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের বসবাস এদের ভৌগোলিক কারণে প্রতিবছর একাধিকবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হতে হয়। সুন্দরবনের বাঘ আর পাউবোর বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন দিয়ে তাদের জীবন চলে প্রতিনিয়ত। ১৯৬৮/৭০ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ নির্মাণ হয়েছে সেই বাঁধে জোড়া তালি দিয়ে এখনো দৈনন্দিন জীবন যাপন করছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংকেত দিলে বাচ্চা কাচ্চা গবাদি পশু নিয়ে পরানটা হাতের মোটেই করে এদের জীবন যাপন চলে দুশ্চিন্তায়। কেহ যায় সাইক্লোন সেন্টারে আবার কেহ জীবন বাজি রেখে নিজ বাড়িতে জীবন কাঁটায়। ৫৫ বছর আগের নির্মাণ করা পাউবোর বেড়িবাঁধের গোড়ায় নদী ভাঙ্গন আবার কোথাও নদী ভাঙ্গনে বেড়ীবাঁধ সহ মানুষের বাড়ি ঘর জমা জমি মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজ নদীতে নিয়ে গেছে। সরজমিনে ঘুরে এসে দেখা যায় শ্যামনগর উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮ টি ইউনিয়নের ৫০ টি গ্রামের ১৭৪ টি স্পটে মারাত্বক ঝুঁকিতে আছে। গ্রাম গুলো যথাক্রমে কৈখালী ইউনিয়নের নৈকাঠী, ভেড়ার হাট,প্রানপুর, পশ্চিম কৈ খালি,ও দক্ষিণ কৈ খালি রমজান নগর ইউনিয়নের টেংরা খালি,গোলা খালি ও কালিনছে মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের টেংরা খালি,মরাগাং, চুনকুড়ি,সিংহড়তলি,হরিনগর, মথুরাপুর, দক্ষিণ কদমতলা, পূর্ব কালিনগর,মৌখালি ও সেন্টাল কালিনগর, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের কলাবাড়ী,দাতীনা খালি, মহাসিন সাহেবের কর্নার, বুড়িগোয়ালিনী, পূর্ব দূর্গা বাটি, পশ্চিম দূর্গা বাটি,বোদ্দি বাড়ি,ভানিয়া ও পোড়া কাটলা আটুলিয়া ইউনিয়নের বড়ো কূপট,নওয়াবেকী, পূর্ব বেড়া লক্ষী ও দক্ষিণ বেড়া লক্ষী কাশিমাড়ি ইউনিয়নের খুঁটি কাঁটা,ঝাপালি ও ঘোলা পদ্মপুকুর ইউনিয়নের গড় কুমারপুর, চেয়ারম্যানের ঘাট,পাখি মারা,ঝাপা, কামাল কাটিং,পাতা খালি, পূর্ব পাতা খালি, চন্ডী পুর ও খুঁটি কাঁটা গাবুরা ইউনিয়নের, ডুমুরিয়া, হরিশ খালি, গাবুরা ও গাগড়া মারি। পানি বিশেষজ্ঞ দের মতে এর একমাত্র পথ ভেতর দিয়ে জমি ক্রয় করে বাদ উঠিয়ে ভেতরে নিয়ে আসো। তাছাড়া কোনো পদ্ধতিতে পাউবোর বেড়িবাঁধ রক্ষা করা যাবে না। সেই সাথে ওই এলাকার মানুষ ও শান্তিতে বসবাস করতে পারবে না।এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (১) মোঃ সালাউদ্দিন এই প্রতিবেদককে বলেন গাবুরা ইউনিয়নে যেমন মেঘা প্রকল্পে বাস্তবায়ন হচ্ছে এভাবেই শ্যামনগরের উপকূলীয় পাউবোর বেড়িবাঁধে বাস্তবায়ন না করলে উপকূলের মানুষের প্রাকৃতিক ঝুঁকি থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। তিনি আরো বলেন শ্যামনগর, কালিগঞ্জ ও আশাশুনি সকল পাউবোর বেড়িবাঁধে নতুন করার জন্য ডিজাইন সহ ড্রোন ভিডিও আকারে মন্ত্রণালয় প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।যদি একনেকে পাস হয় তাহলে উপকূলের মানুষের বসবাস এর জন্য কপাল খুলে যাবে। তিনি আরো বলেন প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় বিভিন্ন স্পটে ভাঙ্গন সহ ক্ষতীর সিকার হলে আমরা সরকারের কাছে জরুরী বরাদ্দ চেয়ে তা মেরামত করি কিন্তু ক্ষনকের জন্য দুই এক মাস যেতে না যেতেই আবার যা তাই হয়ে যায়। এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা অভিযোগ করে বলেন পাউবোর বাঁধ ফোড় করে পাইব বসিয়ে এবং মিনি সুইচ গেট তৈরি করে ঘের মালিক রা লোনা পানি উত্তোলন করে চিংড়ি চাষ করায় নদী ভাঙ্গনের বড়ো কারন। এগুলো বন্ধ করার জন্য মাননীয় আদালতের একটি নির্দেশনা থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী দের বাৎসরিক টাকা দিয়ে বা তারা এই অবৈধ টাকা গ্রহণ করে বিভিন্ন পন্থায় লবণ পানি উত্তোলন করে চিংড়ি চাষের সুযোগ দিচ্ছেন। এতে ও নদী ভাঙ্গনের বড়ো মারাত্বক কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি সুধী মহল বার বার উপপ্রকৌশলী সহ তাদের উদ্যতন কতৃপক্ষ কে অভিযোগ আকারে জানালেও এই সমস্ত অভিযোগ আলোর মুখ দেখেনা। শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বলেন বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নে পাউবোর ঝুঁকিপূর্ণ সফ্ট গুলো জরুরী ভিত্তিতে মেরামতের জন্য ৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার।তার ২৫ কোটি টাকা ও কাজ করেনি ঠিকাদার পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী ফরিদ হোসেন ও ট্রাক্স ফোর্স ঠিকাদার জোক সাঁজে সে বাকি টাকা আত্ব সাদ করেছে এ ব্যাপারে তিনি আরো জানান ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন তবে শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারে প্রকৌশলী ফরিদ হোসেন জানান সরকারি নিয়ম মেনে কাজ করা হয়েছে এখানে কোন অনিয়ম হয়নি এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা নির্বাহী প্রকৌশলী (১) মোঃ সালাউদ্দিন বলেন কাজটা শুরু থেকে আমি এখানে ছিলাম না সে কারণে সঠিক তথ্য দিতে পারলাম না শ্যামনগর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান গাবুরা পাউবোর মেঘা প্রকল্পে নানা মুখী অনিয়ম হচ্ছে উপ সহকারী প্রকৌশলীরা কারো ও তোয়াক্কা না করে ইচ্ছে মতো কাজ করছে তিনি সেনাবাহিনী তদেরকিতে কাজ পরিচালনা করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন এবং এই সমস্ত দুর্নীতিবাজ পাউবোর কর্মকর্তাদের অপসরণের দাবী জানিয়েছেন কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন কৈখালী ইউনিয়নে যে সমস্ত জায়গায় জরুরী কাজ করা হয়েছে সব কাজ যেনতেন ভাবে পাউবোর কর্মকর্তারা শেষ করেছেন বছর না পুরতেই আগের চেয়ে ভয়াবহ হয়েছে।
শ্যামনগরে ৫০ টি গ্রামে ১৭৪ টি স্পটে পাউবোর বেড়িবাঁধ মারাত্বক ঝুঁকিতে
প্রকাশিতঃ নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ১২:০৭
Leave a Reply