কেন ক্ষেপলেন সালমান

প্রকাশিতঃ নভেম্বর ২০, ২০২৪, ১২:০০

বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে মোবাইল ফোন ব্যবহার সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পর সজাগ হয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সালমানসহ অন্যান্য ভিআইপি বন্দিদের কক্ষে তল্লাশি চালানো হয়েছে। এ সময় সালমানসহ কয়েকজন কারা কর্মকর্তার ওপর খেপে যান বলে কারা সূত্রে জানা গেছে। সালমান বলেন, ‘আপনারা আমাদের ডিস্টার্ব করছেন। গতকাল, মঙ্গলবার এক সংবাদপত্রে “কারাগারেও তৎপর ‘দরবেশ’” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সালমান এফ রহমানের ফোনালাপের খবর উঠে আসে। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর, কারাগারের ভিআইপি বন্দিদের দায়িত্বে থাকা পুরনো কারারক্ষীদের বদলি করা হয়েছে এবং তাদের স্থানে নতুন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, ভিআইপি বন্দিদের একত্রে কথা বলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে তারা একসঙ্গে হাঁটতে পারবেন, তবে হাঁটার সময় ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ আলোচনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমন আলোচনা করার জন্য যদি কেউ ধরা পড়ে, তবে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে, সতর্ক করা হয়েছে। একইসঙ্গে, মোবাইল ফোন ব্যবহারে আর্থিক লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং এই বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ সর্বদা নজর রাখছে।

এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেন পরিস্থিতির পর সালমান এফ রহমানসহ বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তখনকার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কর্ণফুলী সেলে তাদের ডিভিশন দেওয়া হয়েছিল এবং সেখান থেকে মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়েছিল। এরপর তাদের শাস্তি হিসেবে ডিভিশন বাতিল করা হয়েছিল এবং অনেককে দূরের কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।

এ সম্পর্কে কারা বিশেষজ্ঞ এবং সাবেক ডিআইজি প্রিজনস, মেজর (অব.) শামসুল হায়দার ছিদ্দিকী বলেন, “প্রভাবশালী বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন। তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ বন্দির মতো শাস্তি দেওয়া সম্ভব নয়, তবে তাদের অন্য কারাগারে স্থানান্তর, ডিভিশন বাতিল বা পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত বন্ধ করে শাস্তি দেওয়া যেতে পারে।”

বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৬৮ জন ভিআইপি বন্দি রয়েছেন। তাদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী যেমন আনিসুল হক, রাশেদ খান মেনন, ফরহাদ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং সাবেক এমপি, সরকারি কর্মকর্তাদের নাম উল্লেখযোগ্য। অন্যান্য ভিআইপি বন্দিদের মধ্যে আছেন সাবেক সংসদ সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার সাবেক পরিচালক কমোডর মনিরুল ইসলাম, সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরসহ আরও অনেকে।

এদিকে, কারাগারে এসব শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, এবং কর্তৃপক্ষের নতুন নির্দেশনা অনুসারে, ভিআইপি বন্দিদের মধ্যে আরও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নিয়মিত তল্লাশি এবং পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

Leave a Reply