ডেস্ক নিউজ : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জলাবদ্ধতা একদিনে বা এক মাসে নিরসন করা সম্ভব না। জলাবদ্ধতা নিরসনে জনগণের ভোটের সরকার লাগবে। জনগণ যাদের পছন্দ করবে তারা ক্ষমতায় গিয়ে চুরি-ডাকাতি, লুটপাট, দুর্নীতি বাদ দিয়ে সরকারের টাকা দিয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধান করবে।
রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর ইউনিয়নের সাড়াভিটা এলাকায় জলাবদ্বতার শিকার ক্ষতিগ্রস্থ দিনমজুর ও কৃষকদের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জলাবদ্ধতার জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। খালে-বিলে বাধ দিয়ে পানি আটকে জলবদ্ধতার সৃষ্টি করেছি। সরকারি কর্মকর্তাদের সহায়তায় আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা সমস্ত খালে-বিলে বাধ ও পাটা দিয়ে পানি আটকে দিয়েছিল। এখনো প্রশাসনের ভিতরে ঘাপটি মেরে আছে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসররা। তাদেরকে অবিলম্বে সরাতে হবে। তা না হলে ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের সরকার ব্যর্থ হওয়ার আশংকা থেকে যায়। কারণ আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তাদের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
ডুমুরিয়া উপজেলা উত্তরের আমীর গাজী সাইফুল্লাহ’র সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, ডুমুরিয়া উপজেলা দক্ষিণের সেক্রেটারি মাওলানা হাবিবুর রহমান, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন সভাপতি বেলাল হোসেন, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান, ডুমুরিয়া উপজেলা উত্তরের সেক্রেটারি বিএম আলমগীর হোসেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা হিন্দু কমিটির সহ-সভাপতি হরিপদ দাস, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ দেবপ্রসাদ, রংপুর ইনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রামপ্রসাদ প্রমুখ।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। নাগরিকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার কাজে আমরা সব সময়ে সোচ্চার। আমরা এদেশকে ইসলামের সুমহান আদর্শের আলোকে ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক একটি কল্যাণরাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনীতি করি। যেখানে মানুষের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন হবে। মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা থাকবে। এই রাষ্ট্র ব্যবস্থার সুফল হিসেবে মানুষ তাদের স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকার সুনিশ্চিত হবে এবং মানবতার পাশে সকলে দাঁড়াবে।
তিনি বলেন, জামায়াত সবসময় দল-মত, জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সকল ক্ষতিগ্রস্থ অসহায় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে। জামায়াত ইসলামীর চার দফা কর্মসূচির মধ্যে একটি অন্যতম কর্মসূচি হচ্ছে সমাজসেবা ও সমাজ সংস্কার। মানুষের কল্যাণে কাজ করা এটা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে আমরা বিশ্বাস করি। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে যেকোন বিপদ আপদ ও দূর্যোগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সারাবছরই মানুষের পাশে থাকে। মানবতার পাশে আমরা আছি সবসময় থাকব ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের কোষাগারের অর্থ খরচ করে সাধারণ মানুষে দুর্দশা লাঘবে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলে জলাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের পক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ১৫ বছরে যারা মানুষ খুন করেছে, মানুষ খুনা করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে তাদেরকে এদেশে থাকার নৈতিক কোন অধিকার নেই। যেখানের মাল সেখানেই গেছে। ওখানে তার থাকার স্থান।
তিনি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে বলেন, বাজারে এখানো আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের সিন্ডিকেট রয়েছে। এ সব সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে দ্রব্য মূল্যের দাম কমানো সম্ভব না। এসব প্রভাবশালী সিন্ডিকেট দ্রব্য মূল্যের দাম বাড়িয়ে দিযে জনগণকে সরকারের মুখোমুখি দাড় করাতে চায়। সবাইকে এ সব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
Leave a Reply