ক্রীড়া ডেস্ক : রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে আবহাওয়ার প্রভাব কমছেই না। দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিন ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। চতুর্থ দিনে আজ সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) আবারও বৃষ্টির বাধা। প্রথমে আলোকস্বল্পতা, পরে বৃষ্টি মিলিয়ে তৃতীয় সেশনে এক ওভারের বেশি খেলা হয়নি। ম্যাচের বাকি অংশ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় তৃতীয় সেশন পুরোটা হাতে রেখেই। তাই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হবে টেস্টের শেষ দিনে। আগামীকাল মঙ্গলবার রাওয়ালপিন্ডিতে আরেকটি রোমাঞ্চকর জয়ের অপেক্ষায় নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
চতুর্থ দিন শেষে সাত ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৪২ রান। ম্যাচ জিততে প্রয়োজন আরও ১৪৩ রান। ২৩ বলে ৩১ রানে অপরাজিত জাকির হাসান এবং সাদমান ইসলাম অপরাজিত ১৯ বলে ৯ রানে। এ দুজন আগামীকাল সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা শুরু করবেন।
রান তাড়ায় বেশ উড়ন্ত শুরু করেছিল বাংলাদেশ। দুই ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম শুরু থেকেই চড়াও হন পাকিস্তানি বোলারদের ওপর। ১৮৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা সফররত বাংলাদেশ চা বিরতিতে যাওয়ার আগে ছয় ওভারে তোলে ৩৭ রান।
কোনো উইকেট না হারিয়ে বিরতিতে যাওয়া বাংলাদেশ বিরতি থেকে ফিরে মাত্র এক ওভারের বেশি খেলতে পারেনি। ইনিংসের সপ্তম ওভারের পর আম্পায়াররা ম্যাচ বন্ধ রাখেন। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা ২৩ মিনিটে বন্ধ হয় চতুর্থ দিনের শেষ সেশনের খেলা। এরপর আর মাঠে গড়ায়নি।
এর আগে দ্বিতীয় ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৭২ রান তোলে পাকিস্তান। ১২ রানের লিডসহ পাকিস্তানের মোট সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৮৪ । যার মানে ১৮৫ রান করলেই ইতিহাস গড়বে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৫টি উইকেট নেন পেসার হাসান মাহমুদ। চারটি নেন নাহিদ রানা।
আজ দিনের শুরুটা অবশ্য দেখেশুনে করে পাকিস্তান। তবে, সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি দলটি। দলীয় ৪৭ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় পাকিস্তান। তাসকিনের বলটা ফুল লেংথে পিচ করে অফ স্টাম্প দিয়ে বেরিয়ে যেত। কিন্তু আক্রমণাত্মক মেজাজে থাকা সাইম ড্রাইভ করলেও তা মিড অফে থাকা অধিনায়ক শান্তর কাছে যায়। ক্যাচ লুফে নিতে ভুল করেননি তিনি। ৩৫ বলে ২০ রান করেন আইয়ুব।
আইয়ুবের বিদায়ের পর অধিনায়ক শান মাসুদও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। নাহিদ রানার শর্ট পিচের বলটা ওয়াইড লেংথে পরে বেরিয়ে যাচ্ছিল। মাসুদ স্কয়ার কাট করার চেষ্টায় ব্যর্থ হন। বল তার ব্যাটে লেগে জমা হয় লিটনের গ্লাভসে। ৩৪ বলে ২৮ রান আসে এই বাঁহাতি ব্যাটারের ব্যাট থেকে। এরপর অভিজ্ঞ বাবর আজমকেও ফেরান তরুণ এই পেসার। রানার বাউন্সে স্লিপে থাকা সাদমানের কাছে ক্যাচ দেন বাবর। সবমিলিয়ে দলীয় ৬৫ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে পাকিস্তান। ১৮ বলে ১১ রান আসে বাবরের ব্যাট থেকে।
পরপর দুই বলে উইকেট নেওয়ার সুযোগ ছিল নাহিদ রানার সামনে। কিন্তু পারলেন না সাদমান ইসলামের ব্যর্থতায়। আগের বলে বাবরের ক্যাচ পেয়েছিলেন বুকের ওপর, নিয়েছিলেন সহজেই। এবার বাঁ দিকে সরতে হয়েছে, তাতেই শরীরের ভারসাম্য রাখতে পারেননি। যার ফলে প্রথম বলেই জীবন পেয়ে যান রিজওয়ান।
এরপর দলীয় ৮১ রানের মাথায় নিজের তৃতীয় ও দলের ষষ্ঠ উইকেট তোলেন নাহিদ। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে আসা নাহিদের বলটার গতি ও লাইন ধরতে পারেননি শাকিল। খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে লিটনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। ১০ বলে মাত্র ২ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপর রিজওয়ান-সালমান আগা প্রতিরোধ গড়লেও তারা খুব বেশিদূর দলকে নিতে পারেননি। শেষমেশ ১৭২ রানে থামে পাকিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন সালমান আগা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ৭ ওভারে ৪২/০ (জাকির ৩১*, সাদমান ৯*; হামজা ৩-১-১২-০, খুররাম ৩-০-২৩-০, আবরার ১-০-৫-০)
Leave a Reply