ভয়েজ ডেস্ক : সারা দেশের ন্যায় যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আজ (সোমবার) খুলনায় সরকারিভাবে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সাঃ) উদযাপন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ভবন, বেসরকারি ভবন ও সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদর দপ্তর, ইউনিট, ঘাঁটি, জাহাজসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন, শিশু একাডেমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সংগঠন দিবসটি নানান কর্মসূচির মধ্যদিয়ে উদযাপন করে। বাদজোহর দেশের সকল সামরিক ও বেসরকারি হাসপাতাল, কারাগার, শিশু কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র, শিশুসদন, বৃদ্ধনিবাস এবং এতিমখানায় বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়।
ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষ্যে সকালে খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মোঃ ফিরোজ শাহ। নবযোদানকৃত খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর আহমেদ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুল কুদ্দুস, ইমাম পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা মুশতাক আহমাদ, সাধারণ সম্পাদক মাওঃ গোলাম কিবরিয়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ প্রমুখরা বক্তৃতা করেন। স্বাগত বক্তৃতা করেন তালিমুল মিল্লাত রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এফ এম নাজমুস সউদ।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন দিবসটি উপলক্ষ্যে নগরভবন চত্বরে শিক্ষক সমাবেশ, আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন খুলনা ইমাম পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা মুশতাক আহমাদ, সাধারণ সম্পাদক মাওঃ গোলাম কিবরিয়া, কেসিসি’র শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাওঃ নাসির উদ্দিন কাসেমী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে কাউন্সিলর, সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর, সচিব সানজিদা বেগম, চিফ প্ল্যানিং অফিসার আবির-উল-জব্বার, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অফিসার এসকেএম তাছাদুজ্জামানসহ কেসিসির বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, তৎকালীন আরব সমাজের অন্যায়, অবিচার, অসত্য ও অন্ধকার দূর করে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মানুষকে আলোর পথ দেখান এবং সত্য সুন্দর ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আদর্শ মোতাবেক চলতে পারলে জীবন হবে উন্নত।
দিবসটি উপলক্ষ্যে শিশু একাডেমিতে শিশুদের জন্য হামদ-নাত, রচনা প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ডিসিপ্লিনের প্রধান এবং কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ শাহজাহান কবীর। জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন সরকারি বিএল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক মোঃ সিরাজুল ইসলাম। অতিথিরা বলেন, শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আদর্শ নিজে লালন ও চর্চা করবো। ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে তাঁর শিক্ষা সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক ওয়াজ মাহফিল, ক্বিরাত, হামদ নাত, স্বরচিত কবিতা পাঠ, শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, আরবিতে খুৎবা লেখা প্রতিযোগিতা ও সেমিনারের আয়োজন করে। বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা, কেরাত, দোয়া ও মিলাদ এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনীর ওপর কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন মসজিদে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনীর ওপর কুইজ প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। স্কুল-কলেজসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করে।
পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষ্যে স্থানীয় সংবাদপত্র বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। উপজেলা পর্যায়ে অনুরূপভাবে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সাঃ) উদযাপন করা হয়।
Leave a Reply