বিনোদন ডেস্ক : গত মাসের শুরুর দিকে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালের নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এরপর থেকে উত্তাল কলকতা। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রাজপথে নেমেছেন অভিনয়শিল্পীরাও।
কলকাতার চিকিৎসকরা বিক্ষোভ করছেন, কর্মবিরতি পালন করছেন। কর্মবিরতিতে থাকা চিকিৎসকদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তৃণমূলের বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক বলেন— ‘সরকারি বেতন-বোনাস নেবেন তো?’ আর এতেই ক্ষুব্ধ কাঞ্চনের সহশিল্পী ও সাধারণ মানুষ। রীতিমতো তোপের মুখে পড়েছেন কাঞ্চন। এ পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন কাঞ্চনের বর্তমান স্ত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ।
বিষয়টি নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে কথা বলেন অভিনেত্রী শ্রীময়ী। স্বামী কাঞ্চনের বক্তব্যকে সমর্থন করে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘কাঞ্চন তো খুব সাধারণ একটা কথা বলতে চেয়েছে। ও তো ভুল কিছু বলেনি। যে মানুষটা জেলা থেকে আসছেন, তার কাছে হয়তো আন্দোলন নয়, তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ তার বাড়ির মানুষটা। একটা গর্ভবতী নারী যদি হাসপাতালে যায়, যার প্রসবযন্ত্রণা উঠেছে, তাকে তো তৎক্ষণাৎ অপারেশন করতে হবে। নইলে বাচ্চা-মা কাউকেই বাঁচানো যাবে না।’
শ্রীময়ী তার পেশার সঙ্গে চিকিৎসা পেশার তুলনা করে বলেন, ‘চিকিৎসকদের খারাপ লেগেছে সেটা বুঝলাম। তবে আমাদের অনেক সময় অনেককিছুই খারাপ লাগে, আমরা প্রতিশ্রুতি থেকে বের হয়ে আসতে পারি না। আমাদেরই যখন কোনো শিল্পীর অপমৃত্যু হয়, তখন আমরা হয়তো ১ ঘণ্টা শান্তি কামনা করি, তারপর ফ্লোরে ফিরে যাই। চরিত্রটাও বদলে যায়। সেই চরিত্রের জন্য কেউ ১ বছর শোক পালন করে না। এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে। উদাহরণ দিলে তো বিতর্কে তৈরি হবে। আমাদের কাজটা যেমন জরুরি, তেমনি ডাক্তারদের কাজটাও জরুরি পরিষেবা। কোনো রোগীর পরিবার চাইবে না, তার পরিবারের লোকের সঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটুক। সকলের কিন্তু একটাই উদ্দেশ্য আর যেন কোনো অপমৃত্যু না হয়।’
যারা কাঞ্চনকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিচ্ছেন, তাদের ‘আঁতেল’ বলে মন্তব্য করেন শ্রীময়ী। তার ভাষায়— ‘অনেকে অনেক কথা বলছেন। যাদের বক্তব্য পেশ করাটাই কাজ। তারা আসলেই আঁতেল। একটা বক্তব্যকে রাজনীতির জালে ফেলে একটা লোককে কীভাবে অপদস্ত করা যায়, সেটাই তাদের কাজ। এটা আমি সব জায়গায় দেখেছি। আমার বিয়ের ক্ষেত্রেও এমনকি আমরা যখন প্রেম করেছি তখনো বড় বড় কথা বলেছেন। কেউ কিন্তু নিজেকে বিচার করেন না। আগে নিজের মেরুদণ্ড সোজা রাখুন, তারপর অন্যের বিষয়ে মাথা ঘামাবেন। তাদের নিজেদেরই তো কোনো মেরুদণ্ড নেই। তারা যখন যেমন পান, তেমন লাফান। তাদের আসলে কিছু যায় আসে না। আবার বাইরে এসে আঁতেলের মতো বক্তব্য রাখেন। এই লোকজনের বক্তব্যে কিছু যায় আসে না। আমি এগুলো পাত্তা দিই না। তারা হয়তো ভালো অভিনেতা বা অভিনেত্রী। তবে তাদের বক্তব্যে সত্য পাল্টে যায় না।’
মমতার পদত্যাগ চাওয়া অভিনয়শিল্পীদের তরমুজের সঙ্গে তুলনা করে শ্রীময়ী বলেন, ‘এমন অনেকেই আছেন, যারা আজ চেঁচাচ্ছেন, তারাই যখন মুখ্যমন্ত্রী টেলি অ্যাকেডেমি অ্যাওয়ার্ড দিচ্ছেন, তখন সেটা পাওয়ার জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে থাকেন। আবার তারাই আজ বলছেন মমতা ব্যানার্জির পদত্যাগ চাই। বুঝতে পারি না তারা কাকে সাপোর্ট করেন! তারা কি তবে তরমুজের মতো, বাইরে এক, কাটলে আরেক!’
Leave a Reply