ভয়েজ ডেস্ক : দেশের অন্যতম চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশের সরবরাহ কমেছে। ক্রেতাদের চাহিদা থাকলেও তা পূরণ করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।
ফলে স্থানীয় পদ্মা-মেঘনা নদীর ইলিশের দাম এখনও চড়া। এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম এক হাজার ৭০০ টাকা। ইলিশের পাশাপাশি অন্যান্য প্রজাতির মাছ বিক্রি করে বর্তমানে আড়তগুলো সরগরম।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর মাছঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম আড়তগুলো। দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানোর জন্য বক্স করা হচ্ছে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ। নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে আসা ইলিশ ট্রাক থেকে নামিয়ে স্তূপ করা হচ্ছে। নামানোর সঙ্গে সঙ্গে হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি হচ্ছে আড়তে।
ঘাটের ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে এসে ভিড়ছে জেলে নৌকা। তারা স্থানীয় পদ্মা-মেঘনা থেকে ধরে আনা ইলিশ বিক্রি করছেন আড়তে।
জেলে মুছা পাটওয়ারী ও সোলায়মান বলেন, ঋণ করে কেনা জাল এবং নৌকা মেরামত করে নেমেছি নদীতে। নদীতে ইলিশ কম। তবে দাম ভালো পাচ্ছি। আর এক মাস পর মা ইলিশ রক্ষায় আসবে নিষেধাজ্ঞা। তাই আমাদের চিন্তা এখন কীভাবে ঋণ পরিশোধ করব।
চাঁদপুর শহরের বাসিন্দা ইব্রাহিম খলিল বলেন, আমার স্বজনদের জন্য ঢাকায় পাঠাতে ৭৮ কেজি ইলিশ কিনেছি। স্থানীয় প্রতিকেজি ইলিশ এখনো এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৭০০ টাকা। আরও বেশি ইলিশ কেনার ইচ্ছা থাকলেও বেশি দামের কারণে কিনতে পারিনি।
নরসিংদী থেকে ইলিশ কিনতে এসেছেন এসএম শাহীন। তিনি বলেন, ইলিশের বাড়ি খ্যাত চাঁদপুর মাছঘাটে এসেছি কম দামে ইলিশ কিনতে। কিন্তু এখানে এসে দেখি ভিন্ন চিত্র। ইলিশের দাম অনেক বেশি। এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৭০০ টাকা। কি কারণে ইলিশের দাম এতো বেশি বুঝতে পারছি না।
ভাই ভাই মৎস্য আড়তের দেলোয়ার হোসেন ব্যাপারী বলেন, স্থানীয় ইলিশের আমদানি কিছুটা বেড়েছে। তবে দাম কমেনি। ইলিশের পাশাপাশি পোয়া, চিংড়ি ও চাষের মাছও ঘাটে বিক্রি হচ্ছে।
মেসার্স মিজানুর রহমান ভুঁইয়া আড়তের ম্যানেজার ওমর ফারুক বলেন, গত বছর এসময় দেড় থেকে দুই হাজার মণ ইলিশ আমদানি হয়েছে। এবার আমদানি কমেছে। প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে ৭০০ মণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। ছোট ইলিশ প্রতিমণ ৩০-৩৫ হাজার টাকায়, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ইলিশ প্রতিকেজি ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়, এক কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকায়, এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি ২০০০ থেকে ২১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে হাতিয়া থেকে আসা ইলিশের দাম প্রতিকেজিতে ১০০ থেকে ২০০ টাকা কম।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, মাছঘাট এলাকা পর্যটন কেন্দ্র হয়ে গেছে। এখানে শুধু মাছ বিক্রি হয় না, অনেকে ঘুরতে আসেন বিভিন্ন জেলা থেকে। আবার ইলিশ মাছও কেনেন। ক্রেতাদের চাহিদার অনুযায়ী সরবরাহ কম। যে কারণে দামও কিছুটা বেশি। এখন প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৭০০ মণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি আড়তগুলোতে বিক্রি হচ্ছে নদীর চিংড়ি, পোয়া ও চাষের বিভিন্ন মাছ।
Leave a Reply