কুষ্টিয়ার খোকসায় অতিবৃষ্টিতে কৃষিতে ব্যাপক ফসলহানি

প্রকাশিতঃ অক্টোবর ১, ২০২৪, ১৩:৫১

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : গত সেপ্টেম্বর মাসে তিন দফা অতিবৃষ্টিতে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় ব্যাপক ফসলহানি হয়েছে। চলতি মৌসুমে স্থানীয় কৃষকের সম্ভাবনার রোপা আমন ধান, মাসকলাই চাষ, সবজি ও কলা চাষে এ ফসলহানি হয়েছে বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক গত সেপ্টেম্বর মাসে তিন দফা অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় উপজেলার আমন ধানের ৫.৮ হেক্টর জমি, সবজি চাষের ৩. ৮৫ হেক্টর জমি, মাসকলাই চাষে ০.৫ হেক্টর জমি ও কলা চাষে ৩.৫ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে জলাবদ্ধতায় মৎস্য ব্যবসায়ীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান উপজেলা মৎস্য অফিস।
এ বিষয়ে সরেজমিনে তদারকি করে দেখা গেছে, খোকসা পৌরসভার প্রায় দেড় হেক্টর জমিতে জলাবদ্ধতায় আমন ধানের ব্যাপক ফসল হানি হয়েছে। এছাড়াও উপজেলার আমবাড়িয়া, গোপগ্রাম, শোমসপুর ও ওসমানপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় দলাবদ্ধতাই আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান কৃষকরা।
পৌরসভার কৃষক তেজেম আলী জানান, প্রতি বছরই উপজেলা পরিষদের জমির লিজ নিয়ে আমরা ধানের আবাদ করি এবারে পরপর তিন ধাপের অতি বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতায় প্রায় দেড় হেক্টর জমির সকল আমন ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।

সবজি উৎপাদনের মাঠ হিসাবে জয়ন্তীহাজরা ইউনিয়নের প্রায় ১ হেক্টর সবজি জমির ফসল সম্পূর্ণ বা আংশিক নষ্ট হয়ে গেছে। মাঠের সবজি চাষী গৌতম বিশ্বাস, নিখিল বিশ্বাস ও স্থানীয় আরো কয়েকজন কৃষকরা আমাদেরকে জানিয়েছেন এ মৌসুম পটল, ঝিঙ্গে, লাউ, মরিচের আবাদ করি। সবচেয়ে মৌসুমের শুরুতে খুব সুন্দর সবজির গাছ হলেও তিন দফা অতিবৃষ্টিতে পানিতে তলিয়ে যাওয়াই সকল সবজি এখন নষ্ট হয়ে গেছে।
এছাড়াও জলাবদ্ধতার কারণে উপজেলার উত্তর শ্যামপুর, ঝালুকাদহ, মালি,গ্রাম, পাতেলডাঙ্গী, কাদিরপুর, ভবানীগঞ্জ, বনগ্রাম, ঈশ্বরদী, মোড়াগাছা, শিমুলিয়া সহ বিভিন্ন গ্রামে সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার পুরস্কার প্রাপ্ত মৎস্য ব্যবসায়ী আজমল হোসেন খান লালন বলেন, এবার অতি বৃষ্টির কারণে আমার পাঁচটি বড় বড় মাছের পুকুরের ২ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গেছে । পুকুরের পাড় দিয়ে কলাগাছ, পেঁপে গাছ উপরে পড়ে গেছে । এতে আমার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ।
জলাবদ্ধতায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতির বিপরীতে উপজেলা কৃষি অফিস জানান, আগাম রবি ফসল আবাদ করে এ সকল কৃষকরা তাদের ক্ষতি উঠিয়ে দিতে পারবেন আর সেজন্যই প্রণীতলার সকল উপকরণ সরিষা বীজ মসুরের বীর সহ অন্যান্য বীজ এবং রাসায়নিক সার পর্যাপ্ত পরিমাণে উপজেলায় বরাদ্দ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সবুজ কুমার সাহা বলেন, কৃষিতে আমল পরিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় কৃষকরা এখন অল্প জমিতে অধিক ফলনের ফসল ফলাচ্ছে। এতে একদিকে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে, অপরদিকে ক্রমবর্ধমান খাদ্যের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, খোকসা উপজেলার বেশ কিছু সবজি উৎপাদনকারী কৃষকরা আধুনিক মিনি গ্রিনহাউস তৈরি করে পলিথিন মাধ্যমে অতি বৃষ্টি ও অনাবৃষ্টির রোধ করে আগাম সবজি উৎপাদন করে অধিক ফলন ও অধিক টাকা আয় করে লাভবান হচ্ছেন।

Leave a Reply